Thursday, June 18, 2015

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মুস্তাফিজের সঙ্গে ধোনির ‘অভদ্রতা’ সমালোচনা

 টাইগারদের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে মেজাজ হারিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের কথিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৩০৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১১৫ রানে চার উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতীয় অধিনায়ক অদ্ভুত আচরণ করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় দুরন্ত বোলিং করতে থাকা অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান ২৫তম ওভার করতে এলে যেন তাকে টার্গেট করে বসেন ধোনি।
২৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল রান নিতে দৌঁড়ানোর সময় মুস্তাফিজকে সজোরে ধাক্কা দেন তিনি। এতে ক্রিজের বাইরে ছিটকে পড়েন মুস্তাফিজ। খানিক সময়ের জন্য ছিটকে পড়েন মাঠ থেকেও। তার পরিবর্তে ২৫তম ওভার শেষ করতে বল হাতে নিতে হয় নাসির হোসেনকে। নাসিরের বোলিংয়ের সময় এবং ওভার শেষে বারবার মুস্তাফিজকে ধোনির ধাক্কা দেওয়ার দৃশ্যটি দেখানো হতে থাকে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, কথিত ক্যাপ্টেন কুল মেজাজ হারিয়ে আন্তর্জাতিক মাঠের একেবারে নবীন মুস্তাফিজকে সজোরে ইচ্ছাকৃতভাবেই ধাক্কা দেন। উল্টো আবার মুস্তাফিজের বিরুদ্ধে ক্রিজে হাঁটার অভিযোগ তোলেন আম্পায়ারের কাছে।
ধোনির এই অক্রিকেটারসুলভ আচরণ মানার মতো না হলেও ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা বলে চলতে থাকে। পরের ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান। ২৬তম ওভারের তৃতীয় বলেই ভারতের সেরা অধিনায়ক বলে কথিত ধোনিকে মাত্র ৫ রানে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এরপর দেখা যায় সাকিব-মুশফিক-তামিম-মাশরাফিদের বুনো উল্লাস, যেন ম্যাচেই জয়লাভ হয়ে গেছে। আসলে এটা যে ধোনির ধাক্কায় মুস্তাফিজের মাঠ থেকে ছিটকে যাওয়ার চরম প্রতিশোধ সে ইঙ্গিত দেওয়া হতে থাকে ক্রিকইনফোর কমেন্টারিতেও।
অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ করেও শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকতে না পারা ধোনির এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকে রাগ ঝাড়ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘কনুই মেরে ক্রিকেট জেতা যায় না। ওটা জিততে খেলতে হয় বা আম্পায়ার-আইসিসির হেল্প লাগে। আফসোস, দুটোর কোনোটাই পারছে না ইন্ডিয়া। আফসোস, আফসোস, আফসোস।‘সাংবাদিক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তের বিএসএফ দেখিনি, ধোনিকে দেখলাম…’
সাংবাদিক রবিউল ইসলাম আওলাদ বলেন, ‘ধাক্কা দিলে ঘাড় ধাক্কা খেতে হয়।’
বাকি বিল্লাহ নামে একজন বলেন, ‘অনভিজ্ঞ মুস্তাফিজ ভুল করে ব্যাটসম্যানের লাইনে দাঁড়িয়েছিলো- ইচ্ছা করে নয়। কিন্তু অভিজ্ঞ ধোনি ইচ্ছা করে গুরুতর আঘাত করলো তাকে- ওটাকে … ধোনি তো আর শুধু শুধু বলা হয় না। যা হোক, সাকিব জবাব দিয়েছে- …টা পত্রপাঠ বিদায় হয়েছে।’
আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, ‘লজ্জা এমএস…সে একটা বাচ্চা। ক্রিকেটের স্পিরিট এখানে ধর্ষিত হলো… লজ্জা তোমার প্রতি, এমএস…!’
‘শিশু নির্যাতন করে সঙ্গে সঙ্গেই শাস্তি পেলেন ধোনি’ বলেও লিখেছেন এক ফেসবুক ব্যবহারকারী।
ক্ষোভ প্রকাশের ধরন যেমনই হোক, ধোনির এ আচরণ সমানভাবেই হতবাক করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।

হেলিকপ্টার ভাড়ার বিস্তারিত জেনে রাখুন…..

বাংলাদেশেও এখন জরুরি প্রয়োজন, রোগী পরিবহন কিংবা শখের ভ্রমণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে। কিন্তু কোথা থেকে কিভাবে ভাড়া নেবেন হেলিকপ্টার? আর ভাড়াই বা কত?
দেশে বেশ কয়েকটি কম্পানি রয়েছে, যারা বাণিজ্যিকভাবে হেলিকপ্টার ভাড়া দেয়। এসব হেলিকপ্টার সাধারণত তিন থেকে সাতজন যাত্রী পরিবহন করে। কম্পানিভেদে হেলিকপ্টার ভাড়ার তারতম্য রয়েছে।
বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেড
বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেডের ছয়জন যাত্রী বহনে সক্ষম বেল-৪০৭ হেলিকপ্টারের জন্য ভাড়া গুনতে হবে প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ টাকা। আর তিনজন যাত্রী বহনে সক্ষম রবিনসন আর-৪৪-এর ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৬০ হাজার টাকা। সব ভাড়ার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট সংযুক্ত করতে হবে। যোগাযোগ-বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেড ৬৮/১ গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১
ঢাকা। ফোন: ৯৮৮৫৭৭১-২, ৯৮৫৬৯৬৩-৪ স্কয়ার এয়ার লিমিটেডস্কয়ার এয়ার লিমিটেডের ছয়জন যাত্রী বহনে সক্ষম বেল-৪০৭ হেলিকপ্টারের ভাড়া প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর চারজন যাত্রী বহনে সক্ষম রবিনসন আর-৬৬-র ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ ছয় হাজার টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি ফ্লাইটে ইনস্যুরেন্স খরচ দুই হাজার টাকা।
যোগাযোগ- স্কয়ার এয়ার লিমিটেড, স্কয়ার সেন্টার, ৪৮ মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন : ০১৭১৩১৮৫৩৫২
সিকদার গ্রুপ
সিকদার গ্রুপের তিনটি হেলিকপ্টার আছে হল বেল-৪০৪, আর-৬৬ ও আর-৪৪ সাত সিটের হেলিকপ্টার ভাড়া ঘণ্টায় এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। তিন সিটের ভাড়া ঘণ্টায় ৭২ হাজার টাকা। সঙ্গে ভ্যাট ১৫ শতাংশ। প্রতি ঘণ্টায় ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ দিতে হবে সাত হাজার টাকা। যোগাযোগ-সিকদার গ্রুপ
রাজ ভবন, দ্বিতীয় তলা, ২৯ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন : ৯৫৫০২৭১ সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্
সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্ সাধারণ কাজের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া প্রতি ঘণ্টা ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু সিনেমার শুটিং, লিফলেট বিতরণসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজের জন্য ভাড়া ৩০ শতাংশ বেশি। ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ প্রতি ঘণ্টার জন্য পাঁচ হাজার টাকা। এ ছাড়া পুরো খরচের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। এই কম্পানি থেকে ন্যূনতম ৩০ মিনিটের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়া যায়। জ্বালানি খরচ, ইনস্যুরেন্সসহ বাকি সব কিছু কম্পানিই বহন করে থাকে। যোগাযোগ-সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্ লিমিটেড টাওয়ার হেমলেট
১৬ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ০২ ৯৮৮০৪৯৬ ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড
ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড থেকে সর্বনিম্ন ১ ঘণ্টার জন্য ভাড়া নেওয়া যাবে ৬ আসনবিশিষ্ট ইসি ১৩০বি-৪ হেলিকপ্টার। প্রতি ঘণ্টার জন্য গুনতে হবে এক লাখ টাকা। সেই সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। ভূমিতে প্রতি ঘণ্টার জন্য চার্জ ৫ হাজার টাকা। যোগাযোগ- ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড ৪০ শহীদ তাজউদ্দীন সরণি, তেজগাঁও, ঢাকা। ফোন: ০১৭২৯২৫৪৯৯৬

সাপে কামড়ালে কি করবেন

প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যায় সাপের ছোবলে। অনেক দেশেই সাপের অত্যাচার দারুণ সমস্যা তৈরি করে। ভারতে প্রতি বছর ১০ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। আমাদের দেশেও মাদারীপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ অদৃশ্য সাপের আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।

বিষাক্ত সাপের কামড় খেলেও বাঁচার নানা পথ আছে। এ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বি জে মেডিক্যাল কলেজের সর্প বিশেষজ্ঞ ড. ভিজে মুরালিধর।


ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ২৫০ প্রজাতির সাপ দেখা যায়। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ প্রজাতি বিষাক্ত। বিশেষ করে কোবরা, ভাইপার, ক্রেইট এবং রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। অবশ্য বহু আগে এসব সাপের দৌরাত্ম বেশি ছিল। এখন অনেক কমে এসেছে এদের সংখ্যা। এ ছাড়া একই প্রজাতির ভিন্ন সাপ রয়েছে যাদের বিষ মৃত্যু ঘটানোর জন্যে যথেষ্ট নয়। যেমন হাম্পনোজড পিট ভাইপার। এদের কামড়ে রক্তক্ষরণসহ কিডনি নিষ্ক্রিয় হতে পারে।

আবার উজ্জ্বল বর্ণের ক্রেইট কামড়ালে লক্ষণ অন্য সাপের কামড়ের সঙ্গে মেলানো যাবে না। এর কামড়ে রক্ত ঝরে না বা ব্যথাও অনুভূত হয় না। এমনকি অনেক সময় এর কামড়ের চিহ্নও বোঝা যায় না।

তবে যে সাপই কামড় দিক না কেন, প্রথমেই তাকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগিকে দ্রুত বিপদমুক্ত করা যায়।

যা করা উচিত : প্রথমেই সাপে কামড়ানো রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে তার কোনো বিপদ হবে না। উত্তেজনায় রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রোগীকে এমনভাবে শোয়াতে হবে যেন কামড়ের স্থান হৃদযন্ত্র বরাবর কিছুটা নিচের দিকে থাকে। দেহের আঁটোসাঁটো পোশাক, অলংকার ইত্যাদি খুলে ফেলুন। কামড়ের ওপর দিকে একটি ফিতা বা রশি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে ফেলুন।

বিষক্রিয়ায় রোগীর হৃদস্পন্দন অনেক সময় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়। সে ক্ষেত্রে সিপিআর দিন। অর্থাৎ, কেউ পানিতে ডুবে গেলে বা অন্য কোনো শকে আক্রান্তকে শুইয়ে বুকে দুই হাত দিয়ে চাপ দিতে থাকুন। এভাবে তার হৃদযন্ত্র সচল করে ফেলুন।

হাসপাতাল দূরের পথ হলে ফোন দিয়ে বিষ নিস্ক্রিয়করণের কোনো ওষুধের নাম শুনে তা প্রয়োগের চেষ্টা করুন।

যা করবেন না : কামড়ের স্থান সাবান দিয়ে ধোবেন না। আক্রান্ত স্থানের আশপাশে কেটে রক্ত বের করবেন না। ইলেকট্রিক শক দেবেন না। ঠাণ্ডা পানি বা বরফ কামড়ের স্থানে ধরবেন না।



বড় বিষয়টি হলো, সে সাপ কামড়েছে তাকে ধরে মারার পেছনে সময় নষ্ট করবেন না। আক্রান্তকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। রোগীকে পানি বা কোনো ধরনের পানীয় পান করাবেন না।

সাপের বিষক্রিয়া দূর করতে এএসভি অ্যান্টিডোট ব্যবহার করা হয়। এভিএস এর আবার মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এতে মধ্যম থেকে মারাত্মক অ্যালার্জির সৃষ্টি হয় যাকে অ্যানাফাইল্যাক্সিস বলে। কাজেই দেহে এএসভি প্রয়োগ করার আগে আবার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিষ্ক্রিয় করার অ্যান্টিডোটসহ ব্যবহার করতে হবে। আবার কেউ যদি কখনো বিষাক্ত বা সামান্য বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়েও বেঁচে যান, তবে দ্বিতীয়বারের কামড়ে তাকে বাঁচাতে শক্তিশালী এএসভি ব্যবহার করতে হবে। কারণ প্রথম কামড়ের পর তার দেহে অ্যান্টিজেন থেকে যায়। দ্বিতীয় কামড়ের কারণে সেই অ্যান্টিজেনের সঙ্গে বিষ মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে