Thursday, June 18, 2015

বাংলাদেশের জয়ের নায়ক মুস্তাফিজের সঙ্গে ধোনির ‘অভদ্রতা’ সমালোচনা

 টাইগারদের বিপক্ষে ব্যাটিং বিপর্যয়ে মেজাজ হারিয়ে কড়া সমালোচনার মুখে পড়েছেন ভারতের কথিত ‘ক্যাপ্টেন কুল’ মহেন্দ্র সিং ধোনি। ৩০৮ রানের টার্গেটে খেলতে নেমে ১১৫ রানে চার উইকেট হারানোর পর ব্যাটিংয়ে নেমে ভারতীয় অধিনায়ক অদ্ভুত আচরণ করতে থাকেন। এরই ধারাবাহিকতায় দুরন্ত বোলিং করতে থাকা অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান ২৫তম ওভার করতে এলে যেন তাকে টার্গেট করে বসেন ধোনি।
২৫তম ওভারের দ্বিতীয় বলে সিঙ্গেল রান নিতে দৌঁড়ানোর সময় মুস্তাফিজকে সজোরে ধাক্কা দেন তিনি। এতে ক্রিজের বাইরে ছিটকে পড়েন মুস্তাফিজ। খানিক সময়ের জন্য ছিটকে পড়েন মাঠ থেকেও। তার পরিবর্তে ২৫তম ওভার শেষ করতে বল হাতে নিতে হয় নাসির হোসেনকে। নাসিরের বোলিংয়ের সময় এবং ওভার শেষে বারবার মুস্তাফিজকে ধোনির ধাক্কা দেওয়ার দৃশ্যটি দেখানো হতে থাকে। এতে স্পষ্ট বোঝা যায়, কথিত ক্যাপ্টেন কুল মেজাজ হারিয়ে আন্তর্জাতিক মাঠের একেবারে নবীন মুস্তাফিজকে সজোরে ইচ্ছাকৃতভাবেই ধাক্কা দেন। উল্টো আবার মুস্তাফিজের বিরুদ্ধে ক্রিজে হাঁটার অভিযোগ তোলেন আম্পায়ারের কাছে।
ধোনির এই অক্রিকেটারসুলভ আচরণ মানার মতো না হলেও ক্রিকেট ভদ্রলোকের খেলা বলে চলতে থাকে। পরের ওভারে বল করতে আসেন সাকিব আল হাসান। ২৬তম ওভারের তৃতীয় বলেই ভারতের সেরা অধিনায়ক বলে কথিত ধোনিকে মাত্র ৫ রানে মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিতে বাধ্য করেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার।
এরপর দেখা যায় সাকিব-মুশফিক-তামিম-মাশরাফিদের বুনো উল্লাস, যেন ম্যাচেই জয়লাভ হয়ে গেছে। আসলে এটা যে ধোনির ধাক্কায় মুস্তাফিজের মাঠ থেকে ছিটকে যাওয়ার চরম প্রতিশোধ সে ইঙ্গিত দেওয়া হতে থাকে ক্রিকইনফোর কমেন্টারিতেও।
অখেলোয়াড়সুলভ আচরণ করেও শেষ পর্যন্ত ক্রিজে টিকতে না পারা ধোনির এই আচরণে ক্ষুব্ধ হয়ে ফেসবুকে রাগ ঝাড়ছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা।
ক্রীড়া সাংবাদিক দেবব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘কনুই মেরে ক্রিকেট জেতা যায় না। ওটা জিততে খেলতে হয় বা আম্পায়ার-আইসিসির হেল্প লাগে। আফসোস, দুটোর কোনোটাই পারছে না ইন্ডিয়া। আফসোস, আফসোস, আফসোস।‘সাংবাদিক ইশতিয়াক আহমেদ বলেন, ‘সীমান্তের বিএসএফ দেখিনি, ধোনিকে দেখলাম…’
সাংবাদিক রবিউল ইসলাম আওলাদ বলেন, ‘ধাক্কা দিলে ঘাড় ধাক্কা খেতে হয়।’
বাকি বিল্লাহ নামে একজন বলেন, ‘অনভিজ্ঞ মুস্তাফিজ ভুল করে ব্যাটসম্যানের লাইনে দাঁড়িয়েছিলো- ইচ্ছা করে নয়। কিন্তু অভিজ্ঞ ধোনি ইচ্ছা করে গুরুতর আঘাত করলো তাকে- ওটাকে … ধোনি তো আর শুধু শুধু বলা হয় না। যা হোক, সাকিব জবাব দিয়েছে- …টা পত্রপাঠ বিদায় হয়েছে।’
আরিফুল ইসলাম রনি বলেন, ‘লজ্জা এমএস…সে একটা বাচ্চা। ক্রিকেটের স্পিরিট এখানে ধর্ষিত হলো… লজ্জা তোমার প্রতি, এমএস…!’
‘শিশু নির্যাতন করে সঙ্গে সঙ্গেই শাস্তি পেলেন ধোনি’ বলেও লিখেছেন এক ফেসবুক ব্যবহারকারী।
ক্ষোভ প্রকাশের ধরন যেমনই হোক, ধোনির এ আচরণ সমানভাবেই হতবাক করেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।

হেলিকপ্টার ভাড়ার বিস্তারিত জেনে রাখুন…..

বাংলাদেশেও এখন জরুরি প্রয়োজন, রোগী পরিবহন কিংবা শখের ভ্রমণে হেলিকপ্টার ব্যবহার করা যাচ্ছে। কিন্তু কোথা থেকে কিভাবে ভাড়া নেবেন হেলিকপ্টার? আর ভাড়াই বা কত?
দেশে বেশ কয়েকটি কম্পানি রয়েছে, যারা বাণিজ্যিকভাবে হেলিকপ্টার ভাড়া দেয়। এসব হেলিকপ্টার সাধারণত তিন থেকে সাতজন যাত্রী পরিবহন করে। কম্পানিভেদে হেলিকপ্টার ভাড়ার তারতম্য রয়েছে।
বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেড
বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেডের ছয়জন যাত্রী বহনে সক্ষম বেল-৪০৭ হেলিকপ্টারের জন্য ভাড়া গুনতে হবে প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ টাকা। আর তিনজন যাত্রী বহনে সক্ষম রবিনসন আর-৪৪-এর ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৬০ হাজার টাকা। সব ভাড়ার সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট সংযুক্ত করতে হবে। যোগাযোগ-বাংলা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইনস্ লিমিটেড ৬৮/১ গুলশান এভিনিউ, গুলশান-১
ঢাকা। ফোন: ৯৮৮৫৭৭১-২, ৯৮৫৬৯৬৩-৪ স্কয়ার এয়ার লিমিটেডস্কয়ার এয়ার লিমিটেডের ছয়জন যাত্রী বহনে সক্ষম বেল-৪০৭ হেলিকপ্টারের ভাড়া প্রতি ঘণ্টায় এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। আর চারজন যাত্রী বহনে সক্ষম রবিনসন আর-৬৬-র ভাড়া ঘণ্টাপ্রতি ৭৫ হাজার টাকা। এ ছাড়া প্রতি ঘণ্টায় ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ ছয় হাজার টাকা। সেই সঙ্গে প্রতি ফ্লাইটে ইনস্যুরেন্স খরচ দুই হাজার টাকা।
যোগাযোগ- স্কয়ার এয়ার লিমিটেড, স্কয়ার সেন্টার, ৪৮ মহাখালী বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন : ০১৭১৩১৮৫৩৫২
সিকদার গ্রুপ
সিকদার গ্রুপের তিনটি হেলিকপ্টার আছে হল বেল-৪০৪, আর-৬৬ ও আর-৪৪ সাত সিটের হেলিকপ্টার ভাড়া ঘণ্টায় এক লাখ ১৫ হাজার টাকা। তিন সিটের ভাড়া ঘণ্টায় ৭২ হাজার টাকা। সঙ্গে ভ্যাট ১৫ শতাংশ। প্রতি ঘণ্টায় ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ দিতে হবে সাত হাজার টাকা। যোগাযোগ-সিকদার গ্রুপ
রাজ ভবন, দ্বিতীয় তলা, ২৯ দিলকুশা বাণিজ্যিক এলাকা, ঢাকা। ফোন : ৯৫৫০২৭১ সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্
সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্ সাধারণ কাজের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া প্রতি ঘণ্টা ৫৫ হাজার টাকা। কিন্তু সিনেমার শুটিং, লিফলেট বিতরণসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক কাজের জন্য ভাড়া ৩০ শতাংশ বেশি। ভূমিতে অপেক্ষমাণ চার্জ প্রতি ঘণ্টার জন্য পাঁচ হাজার টাকা। এ ছাড়া পুরো খরচের ওপর ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট দিতে হয়। এই কম্পানি থেকে ন্যূনতম ৩০ মিনিটের জন্য হেলিকপ্টার ভাড়া নেওয়া যায়। জ্বালানি খরচ, ইনস্যুরেন্সসহ বাকি সব কিছু কম্পানিই বহন করে থাকে। যোগাযোগ-সাউথ এশিয়ান এয়ারলাইনস্ লিমিটেড টাওয়ার হেমলেট
১৬ কামাল আতাতুর্ক এভিনিউ, বনানী, ঢাকা-১২১৩। ফোন : ০২ ৯৮৮০৪৯৬ ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড
ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড থেকে সর্বনিম্ন ১ ঘণ্টার জন্য ভাড়া নেওয়া যাবে ৬ আসনবিশিষ্ট ইসি ১৩০বি-৪ হেলিকপ্টার। প্রতি ঘণ্টার জন্য গুনতে হবে এক লাখ টাকা। সেই সঙ্গে ১৫ শতাংশ ভ্যাট। ভূমিতে প্রতি ঘণ্টার জন্য চার্জ ৫ হাজার টাকা। যোগাযোগ- ইমপ্রেস অ্যাভিয়েশন লিমিটেড ৪০ শহীদ তাজউদ্দীন সরণি, তেজগাঁও, ঢাকা। ফোন: ০১৭২৯২৫৪৯৯৬

সাপে কামড়ালে কি করবেন

প্রতি বছর অসংখ্য মানুষ মারা যায় সাপের ছোবলে। অনেক দেশেই সাপের অত্যাচার দারুণ সমস্যা তৈরি করে। ভারতে প্রতি বছর ১০ লাখ মানুষ সাপের কামড়ে মারা যায়। আমাদের দেশেও মাদারীপুরের বেশ কয়েকটি গ্রামের মানুষ অদৃশ্য সাপের আতঙ্কে দিনযাপন করছেন।

বিষাক্ত সাপের কামড় খেলেও বাঁচার নানা পথ আছে। এ সম্পর্কে পরামর্শ দিয়েছেন ভারতের বি জে মেডিক্যাল কলেজের সর্প বিশেষজ্ঞ ড. ভিজে মুরালিধর।


ভারতীয় উপমহাদেশে প্রায় ২৫০ প্রজাতির সাপ দেখা যায়। এদের মধ্যে প্রায় ৫০ প্রজাতি বিষাক্ত। বিশেষ করে কোবরা, ভাইপার, ক্রেইট এবং রাসেলস ভাইপারের কামড়ে মৃত্যুর ঘটনা বেশি ঘটে। অবশ্য বহু আগে এসব সাপের দৌরাত্ম বেশি ছিল। এখন অনেক কমে এসেছে এদের সংখ্যা। এ ছাড়া একই প্রজাতির ভিন্ন সাপ রয়েছে যাদের বিষ মৃত্যু ঘটানোর জন্যে যথেষ্ট নয়। যেমন হাম্পনোজড পিট ভাইপার। এদের কামড়ে রক্তক্ষরণসহ কিডনি নিষ্ক্রিয় হতে পারে।

আবার উজ্জ্বল বর্ণের ক্রেইট কামড়ালে লক্ষণ অন্য সাপের কামড়ের সঙ্গে মেলানো যাবে না। এর কামড়ে রক্ত ঝরে না বা ব্যথাও অনুভূত হয় না। এমনকি অনেক সময় এর কামড়ের চিহ্নও বোঝা যায় না।

তবে যে সাপই কামড় দিক না কেন, প্রথমেই তাকে চিকিৎসকের কাছে নেওয়া উচিত। তবে প্রাথমিক চিকিৎসা সম্পর্কে জ্ঞান থাকলে রোগিকে দ্রুত বিপদমুক্ত করা যায়।

যা করা উচিত : প্রথমেই সাপে কামড়ানো রোগীকে আশ্বস্ত করতে হবে যে তার কোনো বিপদ হবে না। উত্তেজনায় রোগীর হৃদস্পন্দন বেড়ে যায়। এতে বিষ দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। রোগীকে এমনভাবে শোয়াতে হবে যেন কামড়ের স্থান হৃদযন্ত্র বরাবর কিছুটা নিচের দিকে থাকে। দেহের আঁটোসাঁটো পোশাক, অলংকার ইত্যাদি খুলে ফেলুন। কামড়ের ওপর দিকে একটি ফিতা বা রশি দিয়ে শক্ত করে বেঁধে ফেলুন।

বিষক্রিয়ায় রোগীর হৃদস্পন্দন অনেক সময় বন্ধ হওয়ার জোগাড় হয়। সে ক্ষেত্রে সিপিআর দিন। অর্থাৎ, কেউ পানিতে ডুবে গেলে বা অন্য কোনো শকে আক্রান্তকে শুইয়ে বুকে দুই হাত দিয়ে চাপ দিতে থাকুন। এভাবে তার হৃদযন্ত্র সচল করে ফেলুন।

হাসপাতাল দূরের পথ হলে ফোন দিয়ে বিষ নিস্ক্রিয়করণের কোনো ওষুধের নাম শুনে তা প্রয়োগের চেষ্টা করুন।

যা করবেন না : কামড়ের স্থান সাবান দিয়ে ধোবেন না। আক্রান্ত স্থানের আশপাশে কেটে রক্ত বের করবেন না। ইলেকট্রিক শক দেবেন না। ঠাণ্ডা পানি বা বরফ কামড়ের স্থানে ধরবেন না।



বড় বিষয়টি হলো, সে সাপ কামড়েছে তাকে ধরে মারার পেছনে সময় নষ্ট করবেন না। আক্রান্তকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ুন। রোগীকে পানি বা কোনো ধরনের পানীয় পান করাবেন না।

সাপের বিষক্রিয়া দূর করতে এএসভি অ্যান্টিডোট ব্যবহার করা হয়। এভিএস এর আবার মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। এতে মধ্যম থেকে মারাত্মক অ্যালার্জির সৃষ্টি হয় যাকে অ্যানাফাইল্যাক্সিস বলে। কাজেই দেহে এএসভি প্রয়োগ করার আগে আবার এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিষ্ক্রিয় করার অ্যান্টিডোটসহ ব্যবহার করতে হবে। আবার কেউ যদি কখনো বিষাক্ত বা সামান্য বিষাক্ত সাপের কামড় খেয়েও বেঁচে যান, তবে দ্বিতীয়বারের কামড়ে তাকে বাঁচাতে শক্তিশালী এএসভি ব্যবহার করতে হবে। কারণ প্রথম কামড়ের পর তার দেহে অ্যান্টিজেন থেকে যায়। দ্বিতীয় কামড়ের কারণে সেই অ্যান্টিজেনের সঙ্গে বিষ মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে

Wednesday, June 17, 2015

জনপ্রিয় নায়ক সোহম ময়মনসিংহের ছেলে

কলকাতার জনপ্রিয় নায়ক সোহম জানালেন, তিনি বাংলাদেশের ময়মনসিংহের ছেলে। ময়মনসিংহে তার দাদুবাড়ি। জনপ্রিয় দৈনিকের সাথে একান্ত আলাপকালে টালিগঞ্জের এই সুঅভিনেতা বলেন, দাদুর কাছে বাংলাদেশের গল্প অনেক শুনেছি। খুব ইচ্ছা আছে দাদুর বাড়িটা ঘুরে যাওয়ার। কিন্তু সময় স্বল্পতার কারণে এবার যেতে পারছি না। পরে যখন শুটিংয়ে আসবো তখন অবশ্যই ময়মনসিংহে দাদুর বাড়িটা ঘুরে আসবো। কলকাতার আলোচিত ছবি ‘অমানুষ’, ‘বোঝে না সে বোঝে না’, ‘গল্প হলেও সত্যি’, ‘জামাই ৪২০’-এর জনপ্রিয় নায়ক সোহম সোমবার একদিনের জন্য প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে এসেছিলেন বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য ‘রকেট’ ছবির মহরতে।
কলকাতার রাজাচন্দ্র ও ঢাকার কামাল মো. কিবরিয়া লিপু পরিচালিত এ ছবিতে তার নায়িকা লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার বিদ্যা সিনহা মিম। মহরতের পর প্রতিবেদকের সঙ্গে একান্তে কিছু কথা বলেন সোহম।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। ঢাকায় নামার পরই এ দেশের মানুষের ভালবাসায় আমি এতটাই মুগ্ধ যে, আমার প্রতি মুহূর্তে মনে হচ্ছে ‘রকেট’ ছবিতে অনেক দায়িত্ব নিয়ে কাজ করতে হবে। এ দেশের মানুষের ভালবাসার প্রতিদান দিতে হবে।
তাদের মনে আরও বেশি জায়গা করে নিতে হবে। সোহম বলেন, বাংলাদেশের সিনেমা আমার খুব একটা দেখা হয়নি। তবে এখন থেকে দেখবো। এ দেশের দর্শক কি চায় সেটা আমার অবশ্যই জানতে হবে।
বাংলাদেশের কোন কোন শিল্পীর সঙ্গে জানাশোনা আছে, এমন প্রশ্নের জবাবে সোহম বলেন, এ দেশের নায়করাজ রাজ্জাকের সঙ্গে জানাশোনা আছে। সবচেয়ে বেশি জানাশোনা আছে ফেরদৌসের সঙ্গে। মিম, অমিত হাসানসহ যাদের সঙ্গে কাজ করবো সবার সঙ্গেই জানাশোনা হয়ে যাবে।
বাংলাদেশ সম্পর্কে সোহম বলেন, এ দেশে যারা এসেছেন, কাজ করেছেন, তাদের সবার কাছেই এখানকার মানুষের আন্তরিকতার কথা শুনেছি। এবার চোখে দেখলাম। বাংলাদেশের মানুষ যে কতটা আন্তরিক তা বলে বোঝাতে পারবো না।
বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ প্রযোজনায় নির্মিতব্য রাজচন্দ ও কামাল মোহাম্মদ কিবরিয়া লিপু পরিচালিত ‘রকেট’ ছবির মহরতে অংশগ্রহণ করার জন্য গতকাল দুপুরে তিনি ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন।
এ ছবিতে তার নায়িকা লাক্স-চ্যানেল আই সুপারস্টার বিদ্যা সিনহা মিম। গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর একটি হোটেলে ‘রকেট’ ছবিটির মহরত হয়। মহরত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে
উপস্থিত ছিলেন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমপি। ঈদের পর থেকে এ ছবির শুটিং শুরু হবে।
shohan


মহরত অনুষ্ঠানে সোহমকে শুভেচ্ছা জানাতে আসেন চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন অভিনেত্রী ও হুমায়ণ আহম্মেদ এর স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।

Thursday, June 11, 2015

মানব জাতির ইতিহাস

মানব জাতির ইতিহাস
প্রতিদিন বিজ্ঞান ঃ ইউভাল নোয়া হারারি ইতিহাস পড়ান হিব্রু ইউভার্সিটি অব জেরুজালেমে। তাঁর রচিত বেস্টসেলার Sapiens: A Brief History of Humankind সম্প্রতি বেশ আলোড়ন তুলেছে। এরই মধ্যে এই বইটি প্রায় ৩০টি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। বইটিতে লেখক মানব জাতির বিবর্তন থেকে শুরু করে আধুনিক যুগের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিপ্লবের নানা বিষয় অত্যন্ত দারুণভাবে বর্ণনা করেছেন।
সবচেয়ে আগ্রহোদ্দীপক ব্যাপার হলো, বিভিন্ন বিশ্লেষণে তিনি ব্যবহার করেছেন বিবর্তনীয় জীববিদ্যার নানা সিদ্ধান্ত। বইটির বাংলা অনুবাদ শুরু করার দুঃসাহস দেখিয়েছি। অনুবাদ নিয়ে সকলের মতামত কামনা করছি। যে কোনো ধরনের ভুলত্রুটি শুধরে দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।


চিন্তাশক্তির মাশুল


নানা পার্থক্য থাকা সত্ত্বেও, সব মানব প্রজাতিরই কিছু লক্ষণীয় বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান ছিল। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, অন্য প্রাণীদের তুলনায় মানুষের মস্তিষ্ক অস্বাভাবিকভাবে বড়। যেসব স্তন্যপায়ী প্রাণীর ওজন ৬০ কেজি তাদের মস্তিষ্কের গড়পড়তা আয়তন ২০০ ঘন সেন্টিমিটার। আড়াই মিলিয়ন বছর আগের সবচেয়ে প্রাচীন মানব নর-নারীর মস্তিষ্কের আকার ছিল প্রায় ৬০০ ঘন সেন্টিমিটারের কাছাকাছি। আধুনিক সেপিয়েন্সের মস্তিষ্কের গড় আয়তন ১২০০ থেকে ১৪০০ ঘন সেন্টিমিটার। নিয়ান্ডারথালদের মস্তিষ্ক ছিল আরো বড়।


আমাদের মনে হতে পারে যে, বিবর্তনের চাকা বড় মস্তিষ্ককে বেছে নিয়েছে- এতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। আমরা আমাদের উচ্চ বুদ্ধিমত্তা কর্তৃক এতোটাই মোহিত হয়ে থাকি যে, আমরা স্বাভাবিকভাবেই ধরে নিই- মস্তিষ্কের আকার যতো বড় এবং শক্তি যতো বেশি হবে ততো ভালো। কিন্তু এমনটাই যদি সত্যি হতো, তাহলে দেখা যেত বিবর্তনের পথে বিড়াল গোত্র থেকে এমন বিড়াল জন্ম নিচ্ছে যারা ক্যালকুলাস পারে। তাহলে পুরো প্রাণীজগতের মাঝে কেবল ‘হোমো’ গণের প্রজাতিগুলোর মাঝেই কেন এতো বিশাল ‘ভাবনা-যন্ত্র’ জন্ম নিয়েছে?


প্রকৃত ঘটনা হলো, দশাসই মস্তিষ্ক শরীরের জন্য একটি মস্ত ঝামেলা। একে-তো এটি বয়ে বেড়ানো সহজ কাজ নয়, বিশেষ করে যখন একে একটি ঢাউস খুলির ভেতরে আবদ্ধ রাখতে হয়। তার ওপর এর জ্বালানী যোগানোও বেশ কঠিন কাজ। ‘হোমো সেপিয়েন্সের’ মস্তিষ্কের ওজন তার শরীরের মোট ওজনের শতকরা ২-৩ ভাগ মাত্র, কিন্তু শরীরের উৎপাদিত শক্তির অন্তত প্রায় শতকরা ২৫ ভাগই মস্তিষ্ক দখল করে নেয়, এমনকি বিশ্রামে থাকাকালীন সময়েও। অন্যদিকে, অন্যান্য এপের মস্তিষ্ক বিশ্রামকালে তাদের শরীরের উৎপাদিত শক্তির শতকরা ৮ ভাগ খরচ করে। প্রাগৈতিহাসিক মানবদেরকে এই বিশাল মস্তিষ্কের মাশুল দু’ভাবে গুণতে হয়েছিল। প্রথমত, তাদেরকে খাবারের খোঁজে বেশি সময় ব্যয় করতে হয়েছিল। দ্বিতীয়ত, তাদের পেশিগুলো ক্রমে ক্ষয়ে গিয়েছিল। অনেকটা সরকার যেভাবে বরাদ্দকৃত অর্থ শিক্ষাখাত থেকে সরিয়ে সামরিক খাতে নিয়ে আসে, তেমনই মানুষ তার শরীরের উৎপাদিত শক্তির গতি-মুখ বদলে মাংসপেশি থেকে নিউরনে নিয়ে আসে। এটি তখনকার তৃণভূমিতে বেঁচে থাকার জন্য খুব একটা ভালো কৌশল ছিল কিনা তা নিয়ে পূর্ব-সিদ্ধান্তে আসা খুব কঠিন। কেননা একটি শিম্পাঞ্জী কোনো হোমো সেপিয়েন্সের সাথে তর্কে জিততে পারবে না, কিন্তু চাইলে মানুষকে একটি পুতুলের মতো টেনে ছিঁড়ে ফেলতে পারে।


আজকের দিনে আমাদের মস্তিষ্ক বেঁচে থাকতে দারুণ সাহায্য করছে, কারণ আমরা এই অঙ্গটির সাহায্য নিয়ে গাড়ি ও অস্ত্র তৈরি করতে পারি যা দিয়ে আমরা একটি শিম্পাঞ্জীর চাইতে জোরে ছুটতে পারি, এবং নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে গুলি করতে পারি, কোনোপ্রকার মল্লযুদ্ধে না গিয়েই। কিন্তু গাড়ি ও অস্ত্র- এসবই তো মাত্র সেদিনকার আবিষ্কার। প্রায় দুই মিলিয়ন বছর ধরে, মানুষের মস্তিষ্কের স্নায়ুতন্ত্রের আকার শুধু বেড়েছে আর বেড়েছে, কিন্তু মনুষ্যজাতি এটা দিয়ে খুব বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারে নি, কেবল মুষ্টিমেয় কিছু চকমকে ছুরি আর তীক্ষ্ণ বর্শা তৈরি করা ছাড়া। তাহলে দুই মিলিয়ন বছর ধরে মানুষের বিশাল মস্তিষ্কের এই বিবর্তনের হেতু কী? সত্যি বলতে কি, আমরা জানি না।


মানুষের আরেকটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এই যে আমরা দু’পায়ে খাড়া হয়ে হাঁটতে পারি। খাড়া হয়ে দাঁড়ালে তৃণভূমিতে শিকার কিংবা শিকারির খোঁজ পাওয়াটা সহজতর হয়। আর সামনের বাহু দু’টো যেহেতু আর চলাচলের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না সেহেতু এগুলোকে অন্য কাজে লাগানো যায়, যেমন- পাথর ছোঁড়া কিংবা সংকেত প্রদান। হাতের ব্যবহারে যারা অধিকতর পটু ছিল, তারা অন্যদের তুলনায় ছিল বেশি সফল। তাই বিবর্তনীয় চাপ আমাদের হাতের আঙুল আর তালুতে স্নায়ুর সমাবেশ ঘটিয়েছে এবং মাংসপেশিতে এনেছে সামঞ্জস্যতা। যার ফলে, মানুষ হাত দিয়ে জটিল সব কাজ সম্পাদন করতে পারে। বিশেষ করে, তারা বানাতে এবং ব্যবহার করতে পারে জটিল সব যন্ত্রপাতি। পাথুরে সরঞ্জাম ব্যবহারের একেবারে প্রাচীন যে প্রমাণ পাওয়া যায় তা প্রায় আড়াই মিলিয়ন বছর পুরনো। নৃতত্ত্ববিদেরা পাথুরে সরঞ্জামের ব্যবহার এবং উৎপাদনের চিহ্ন দেখেই প্রাচীন মানুষদের আলাদা করে চিনতে পারেন।


তবে খাড়া হয়ে হাঁটার কিছু অসুবিধাও আছে। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে আমাদের পূর্বসূরি প্রাইমেটদের কঙ্কালতন্ত্র বিবর্তিত হয়েছে চার পায়ে হাঁটা প্রাণীদের জন্য, যাদের আছে অপেক্ষাকৃত ছোট মাথা। এই অবস্থায় খাড়া হয়ে দাঁড়ানোটা ছিল বেশ বড় একটি চ্যালেঞ্জ, বিশেষ করে যখন ঘাড়ে একটি অস্বাভাবিক আকৃতির খুলি বয়ে বেড়াতে হতো। মনুষ্যজাতিকে উন্নত দৃষ্টিশক্তি ও কর্মক্ষম হাত পাবার মূল্য চুকাতে হয়েছে পিঠ ব্যথা এবং অনমনীয় ঘাড়কে বরণ করে।


নারীরা মূল্য চুকিয়েছে সবচেয়ে বেশি। সোজা হয়ে চলাফেরার জন্য প্রয়োজন ছিল আরো সংকীর্ণ পশ্চাৎ-ভাগ, যার ফলে জননপথ ধীরে ধীরে সংকুচিত হয়ে পড়ে। ব্যাপারটি ঘটেছে ঠিক সেই সময়েই যখন সদ্য জন্ম নেয়া শিশুদের মাথা বড় থেকে আরো বড় হচ্ছে। জন্মকালীন শিশুমৃত্যু নারীদের জন্য একটি বড় বিপত্তি হয়ে দাঁড়ায়। যেসব নারী তাড়াতাড়ি বাচ্চা জন্ম দিয়েছে, যখন শিশুর মস্তিষ্ক ও খুলি আকারে অপেক্ষাকৃত ছোট ও নমনীয় থাকে, তাদের বেঁচে থাকা এবং আরো সন্তান জন্ম দেয়ার সম্ভাবনা বেশি ছিল। প্রাকৃতিক নির্বাচন অপেক্ষাকৃত দ্রুত জন্মদানকে পক্ষপাত দেখিয়েছে। এবং সত্যি বলতে কী, অন্যান্য প্রাণীদের তুলনায় মানুষ অকালেই জন্ম নেয়, যখন শরীরের গুরুত্বপূর্ণ সব অঙ্গ সম্পূর্ণভাবে বিকশিত হয় না। একটি অশ্বশাবক জন্মের কিছুক্ষণ পরেই হাঁটাচলা করতে পারে; একটি বিড়ালছানা মাত্র কয়েক সপ্তাহ বয়সেই মা’কে ছেড়ে খাদ্যের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে, মনুষ্য শিশুরা থাকে একেবারে অসহায়; তাদেরকে খাদ্য, নিরাপত্তা আর শিক্ষার জন্য বড়দের উপর নির্ভর করতে হয় বছরের পর বছর।


এই ব্যাপারটি একইসাথে মানুষের অসাধারণ সামাজিক দক্ষতা নির্মাণে এবং এর অনন্য সমস্যাগুলো তৈরিতে বড় ভূমিকা রেখেছে। একা মায়েরা কখনোই নিজেদের এবং নিজেদের শিশুদের জন্য যথেষ্ট খাদ্য জোগাড় করতে পারতো না। শিশু বড় করে তোলার জন্য প্রয়োজন ছিল পরিবার ও প্রতিবেশীর সহায়তা। একটি শিশুকে মানুষ করে তোলার জন্য প্রয়োজন একটি পুরো গোত্র। স্বাভাবিকভাবেই, বিবর্তন তাদের প্রতি আনুকূল্য দেখিয়েছে যারা শক্তিশালী সামাজিক বন্ধন গড়ে তুলতে পেরেছিল। উপরন্তু, মানুষ যেহেতু অপূর্ণভাবে বিকশিত হয়ে জন্ম নেয়, সেহেতু তাদেরকে অন্য যে কোনো প্রাণীর তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে শিক্ষিত ও সামাজিক করে তোলা সম্ভব। বেশিরভাগ স্তন্যপায়ী প্রাণী জন্ম নেয় অনেকটা মাটির পোড়ার পাত্রের মতো হয়ে, যাকে বাঁকাতে চাইলে আঁচড় পড়তে পারে কিংবা ভেঙেই যেতেই পারে। মানুষ জন্ম নেয় অনেকটা গলিত গ্লাসের মতো; তাদেরকে যেমন খুশি তেমন মোচড় দেয়া যায় কিংবা প্রসারিত করা যায় এবং ইচ্ছেমত আকার দেয়া যায়। এই কারণেই আজকে আমরা শিশুদেরকে খ্রিষ্টান বা বৌদ্ধ হিশেবে বড় করে তুলতে পারি, কিংবা গড়ে তুলতে পারি পুঁজিবাদী কিংবা সাম্যবাদী হিশেবে; এমনকি শান্তিপ্রিয় কিংবা রণ-লিপ্সু হিশেবে।


***


আমরা সাধারণত ধরে নিই যে, বড় মস্তিষ্ক, পাথুরে সরঞ্জামের ব্যবহার, যে কোনো কিছু শিখে নেয়ার উচ্চ ক্ষমতা এবং জটিল সামাজিক কাঠামোর মতো সুবিধাজনক গুণাবলী আমাদেরকে অন্য প্রাণীদের তুলনায় অনেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। এটা স্বতঃসিদ্ধ বলে মনে হতে পারে যে, এই সকল সুবিধাবলীর কারণেই মানুষ পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী প্রাণীতে পরিণত হয়েছে। কিন্তু এই সমস্ত গুণাবলীই মানুষের মানুষ উপভোগ করেছে প্রায় ২ মিলিয়ন বছর ধরে, তারপরও পুরো সময়েই মানুষ একটি দুর্বল ও প্রান্তীয় প্রজাতি হিশেবেই বেঁচে ছিল। মিলিয়ন বছর আগের আদি মানবেরা, বিরাট মস্তিষ্ক এবং তীক্ষ্ণ পাথুরে অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও, প্রতিনিয়ত শিকারি প্রাণীর ভয়ে তটস্থ থাকত। তারা বড় প্রাণী খুব কমই শিকার করতে পারত; নিজেদের বাঁচিয়ে রাখত মূলত ফলমূল ও পোকামাকড় খেয়ে, মাঝেমধ্যে ছোট প্রাণী শিকার করে এবং অন্যান্য শিকারি প্রাণীর ফেলে যাওয়া শিকারের উচ্ছিষ্ট খেয়ে।


সবচেয়ে প্রাচীন পাথুরে অস্ত্রগুলো সাধারণ যে কাজটিতে ব্যবহৃত হতো তা হলো- হাড় ভেঙ্গে সেখান থেকে অস্থিমজ্জা বের করে আনা। কিছু কিছু গবেষক মনে করে থাকেন যে, এটি মানুষের উদ্ভাবিত একটি মৌলিক কাজ। কাঠঠুকরে যেমন গাছের গুড়ি থেকে পোকা বের করে আনায় দক্ষ, ঠিক তেমনিভাবে আদি মানুষেরা হাড় থেকে অস্থিমজ্জা বের করে আনায় বিশিষ্টতা অর্জন করেছিল। কিন্তু প্রশ্ন হলো- কেন অস্থিমজ্জা বের করে খেত ওরা? ওই সময়ের প্রেক্ষিতে নিজেকে কল্পনা করুন। আপনি দেখতে পেলেন, সিংহের দল একটি জিরাফ শিকার করেছে এবং পেট পুরে খাচ্ছে। আপনি ধৈর্যের সাথে ওদের খাওয়া শেষ হওয়ার অপেক্ষায় রইলেন। কিন্তু ওরা চলে গেলেও আপনার সুযোগ আসবে না, কেননা তখন হায়েনা আর শিয়ালের পালা, এবং আপনি বুদ্ধিমান হলে ওদের সাথে প্রতিযোগিতায় যাবার সাহস করবেন না। ওরা সিংহের ফেলে যাওয়া শিকারের বাকিটা চেটেপুটে খাবে। ওরা চলে যাবার পরই আপনার এবং আপনার গোত্রের পালা আসবে। আপনি খুব সতর্কভাবে পড়ে থাকা উচ্ছিষ্টের দিকে এগিয়ে গিয়ে দেখলেন কিছু অবশিষ্ট নেই, কেবল কিছু হাড় পড়ে আছে; তখন আপনি সেই হাড় ভেঙ্গে অস্থিমজ্জা বের করে খেতে শুরু করলেন।


এই ব্যাপারটি আমাদের ইতিহাস এবং মনোজগতকে বুঝে উঠার একটি চাবিকাঠি। কিছুকাল পূর্বেও, খাদ্য শৃঙ্খলে ‘হোমো’ গণের প্রাণীদের অবস্থান ছিল মাঝামাঝি। লক্ষ লক্ষ বছর ধরে, মানুষ ছিল পৃথিবীর ছোট একটি প্রাণী- যারা যা যোগাড় করতে পারত তা-ই খেত; অন্যদিকে প্রায়শই অন্যান্য বড় শিকারি প্রাণীদের শিকারে পরিণত হতো। মাত্র ৪ লক্ষ বছর আগে, মানুষের অল্প কিছু প্রজাতি নিয়মিতভাবে বড় প্রাণী শিকার করতে শুরু করে, এবং মাত্র ১ লক্ষ বছর আগে- হোমো সেপিয়েন্সের উত্থানের পর- মনুষ্যজাতি লাফ দিয়ে খাদ্য শৃঙ্খলের চূড়ায় উঠে।


হঠাৎ করেই খাদ্য শৃঙ্খলের মাঝামাঝি অবস্থান থেকে চূড়ায় পৌঁছে যাওয়ার প্রভাবটি ছিল বেশ সাঙ্ঘাতিক। অন্যান্য যেসব প্রাণী খাদ্য শৃঙ্খলের একেবারে চূড়ায় ছিল, যেমন- সিংহ, হাঙর; তারা ওই অবস্থান অর্জন করেছে খুবই ধীরে ধীরে, কোটি বছরের বিবর্তনের পর। তাই পারিপার্শ্বিক বাস্তুতন্ত্র সময়ের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে পেরেছে, যার ফলে সিংহ কিংবা হাঙর- কেউই খুব বেশি ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে নি। সময়ের সাথে সিংহ ধীরে ধীরে হয়ে উঠেছে ভয়ংকর শিকারি, একই সাথে হরিণের দল বিবর্তিত হয়ে আরো দ্রুত দৌড়াতে শিখেছে, হায়েনার দল নিয়ে নিয়েছে সাহায্যকারীর ভূমিকা, আর গণ্ডারেরা হয়ে উঠেছে বদমেজাজি। অন্যদিকে, মনুষ্যজাতি এতো দ্রুত খাদ্য-শৃঙ্খলের চূড়ায় উঠে পড়েছে যে, পারিপার্শ্বিক বাস্তুতন্ত্র ঠিকমতো অভিযোজিত হবার সময় পায় নি। উপরন্তু, মানুষও ঠিকমতো নিজেকে পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারে নি। পৃথিবীর বেশিরভাগ শীর্ষস্থানীয় শিকারি প্রজাতি যেন একেকটি রাজকীয় প্রাণী। লক্ষ লক্ষ বছরের আধিপত্য তাদের মাঝে এনে দিয়েছে অসম্ভব আত্মবিশ্বাস। সেদিক দিয়ে তুলনা করলে, হোমো সেপিয়েন্স যেন কোনো বেনানা রিপাবলিকের স্বৈরশাসক। কিছুকাল আগেও আমরা ছিলাম সাভানার অসহায় একটি প্রাণী; সেখান থেকে হঠাৎ আজকের অবস্থানে উঠে এসে আমরা যেন নিজেদের অবস্থান নিয়ে ভীত ও চিন্তিত, যা আমাদেরকে করে তুলেছে দ্বিগুণ হিংস্র ও ভয়ংকর। ইতিহাসের অসংখ্য ধ্বংসলীলা, রক্তাক্ত যুদ্ধ থেকে শুরু করে পরিবেশ বিপর্যয়ের পেছনে এই হড়বড়ে উল্লম্ফনের দায় আছে।

Monday, June 8, 2015

জীবনের শেষ মূহুর্তে লিখা চিঠি .....A+ এর দাম জীবনের চেয়ে বেশি, ,,,,

আরাফাত শাওন, অন্য দশটা ছেলের মত সেও এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছিল । কিন্তু সে এ+ পাইনি । এইবার কমার্স থেকে পরীক্ষা দিয়ে 4.83 পেয়েছিল। কিন্তু বাবা-মায়ের বকা সহ্য না করতে পেরে আত্মহত্যা করেছে।আত্মহত্যার আগে এসমাজের মানুষগুলোকে ও রাজনীতি সম্পর্কে বিষোদগার করে গিয়েছে। এমনকি শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে। সবশেষে তার কাছে কারা কারা টাকা পায় তারও একটি হিসাব দিয়ে গেছেন। চলুন দেখে নেই কি লিখেছিলেন তিনি তার সু্ইসাইড নোটে…

Picture 1

Picture 2

Picture 3

Picture 4

Picture 5

Picture 6

Picture 7

Sunday, June 7, 2015

অকালে চুল পাকা রোধ করার কার্যকরী টিপস

বয়স হলে চুল সাদা হবে বা পেকে যাবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অল্প বয়সে চুল পাকা মোটেও স্বাভাবিক নয়। কিন্তু বর্তমানে অনেকেরই কম বয়সে চুল পাকার প্রবণতা দেখা যায়। বয়সের আগে চুল পাকার পেছনে কাজ করে কিছু কারণও। এগুলোর মধ্যে ভেজাল খাবার, দূষণ, অনিয়মিত জীবনযাপন ও ক্ষতিকর কেমিক্যালযুক্ত প্রসাধনীর ব্যবহার অন্যতম।

অকালে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে জেনে নিন, কয়েকটি আয়ুর্বেদিক উপায়।



১) হরতকীর গুঁড়া ১ চা চামচ, মেহেদি পাতা বাটা দুই চা চামচ এবং আধাকাপ নারকেল একসাথে মেশান। এবার ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে মিশ্রণটি ঠান্ডা করুন। পুরো চুলে লাগিয়ে ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন।



২) ১০ গ্রাম মেহেদিপাতা, ১০ গ্রাম কেশুতপাতা, হরীতকীর ছাল, ২টি আমলকী, ৭-৮টি জবুফলের মাঝের অংশ ও বিটের রস ভালো করে ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে হেয়ার টনিক তৈরি করুন। এই টনিক নিয়মিত পুরো চুলে লাগান। ৪০ মিনিট রেখে ভালো করে শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। অসময়ে চুল পাকা প্রতিরোধ করতে পারবেন খুব সহজেই।



৩) আমলকীর রস, বাদামের তেল ও লেবুর রস একসাথে মিশিয়ে সপ্তাহে কমপক্ষে ২ থেকে ৩ দিন ব্যবহার করুন। চুল পাকা কমে যাবে।

৪) একটি দুটি করে চুল সাদা হতে শুরু করলেই মেহেদি, ডিমের কুসুম ও টকদই একসাথে মিশিয়ে প্যাক তৈরি করে চুলে লাগান। সপ্তাহে এক বার এই প্যাক ব্যবহার করুন। এই প্যাক চুল পাকা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে।

৫) ১ কাপ নারকেল তেল, ১ টেবিল চামচ মেথি গুঁড়া, ২ টেবিল আমলকী গুঁড়া একসাথে মিশিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল দিন। তেল বাদামি রঙ ধারণ করলে নামিয়ে ফেলুন। ঠান্ডা হয়ে গেলে ছেঁকে নিন। এই তেল সপ্তাহে ২ দিন চুলের গোড়াসহ পুরো চুলে লাগিয়ে ম্যাসাজ করুন। ২ ঘণ্টা পর শ্যাম্পু করে ধুয়ে ফেলুন। এতে চুল পাকার সমস্যা দূর হবে দ্রুত।


এছাড়া চুলের ধরন অনুযায়ী নিয়মিত ভালো ব্যান্ডের শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করুন। চুলের ক্রিম, জেল, স্প্রে, সিরাম, কালার ইত্যাদি ব্যবহারের ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। এ সবই বিভিন্ন ক্ষতিকর কেমিক্যাল দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে, যেগুলো চুলের জন্য কোনোভাবেই ভালো নয়। নিয়মিত ফলমূল, রঙিন শাকসবজি, পুষ্টিকর খাবার খান ও প্রচুর পরিমাণে পান করুন। চুল সাদা হওয়া প্রতিরোধ তো করবেই, সেই সাথে চুল হবে সুন্দর ও ঝলমলে।

তথ্যসূত্র: আরিয়ামান সুদ, হারবাল টেকনিক, ১৯৯৫